ঘরোয়া বা বাইরের পোশাক রূপে ফতুয়া গ্রীষ্মকালের জন্য বেশ আরামদায়ক। একটি ৩ বছরের শিশুর ফতুয়া তৈরির জন্য প্রথমেই মূল নকশার পরিকল্পনা করে কাগজে ড্রাফটিং করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ড্রাফটিংয়ের জন্য যেসব জিনিস সংগ্রহ করতে হবে সেগুলো হচ্ছে- বাদামি কাগজ, পেনসিল, স্কেল, শেপকাট, রাবার, গজফিতা, পিন ইত্যাদি। ফতুয়া তৈরিতে ৩ বছরের শিশুর উপযোগী শরীরের বিভিন্ন অংশের মূল মাপগুলো এবং ড্রাফটিং তৈরির পদ্ধতি নিচে তুলে ধরা হলো।
প্রয়োজনীয় মাপ
ঝুল— ১৭ ইঞ্চি বা ৪৩.১৮ সেন্টিমিটার
বুক- ২২ ইঞ্চি বা ৫৫.৮৮ সে.মি.
কাধ— ৯ ইঞ্চি বা ২২.৮৬ সেন্টিমিটার
হাতার লম্বা- ৩.৫ ইঞ্চি বা ৮.৮৯ সেন্টিমিটার এবং কাফ বা মুহুরী- ৪ ইঞ্চি বা ১০.১৬ সেন্টিমিটার।
ফতুয়ার সামনের ও পেছনের অংশের ড্রাফটিং
ফতুয়ার পেছন ও সামনের অংশের ড্রাফটিং একই সাথে করা হয়। প্রথমে কাঁধের মাপের অর্ধেক বা পুটের মাপের সাথে ১.২৭ সে.মি. যোগ করে ক ঘ (১১.৪৩+১.২৭=১২.৭ সে.মি.) রেখা টানতে হবে। অতঃপর বুকের ১/৪ অংশের মাপ (১৩.৯৭ সে.মি.) নিয়ে ক খ রেখা টানতে হবে। খ বিন্দু হতে বুকের ১/৪ অংশ + ৫.০৮ সে.মি. ঢিলা + ১.২৭ সে.মি. সেলাই = ২০.৩২ সে.মি. দূরে ঝ বিন্দু নির্ধারণ করে খ ঝ যোগ করতে হবে। খ ঝরেখার ওপর ক খ গ ঘ আয়তক্ষেত্র তৈরি হবে।
গলার চওড়া নির্ধারণের জন্য ক বিন্দু থেকে বুকের ১/১২ অংশ = ৪.৫৭ সে.মি. দূরে ঙ বিন্দু শনাক্ত করতে হবে। পেছনের গলার গভীরতার জন্য ক বিন্দু হতে ২.৫৪ সে.মি. নিচে ঞ বিন্দু শনাক্ত করে ঙ ঞ গোল করে যোগ করতে হবে। এখন সামনের গলার শেইপ তৈরি করার জন্য ক বিন্দু হতে বুকের ১/৮ অংশ 6.98 = সে.মি. নিচে জ বিন্দু শনাক্ত করে ও থেকে জ গোল করে যোগ করতে হবে। গলার শেইপ পছন্দমতো আরও গভীর করা যেতে পারে। অতঃপর ঘ বিন্দু থেকে ১.২৭ সে.মি. নিচে চ বিন্দু শনাক্ত করে ঙ চ যোগ করতে হবে। বগলের শেপের জন্য গ চ রেখার মধ্যবিন্দু ছ শনাক্ত করে ছ ঝ বিন্দু বাঁকা ভাবে যোগ করলে পেছনের বগলের শেইপ তৈরি হবে। সামনের বগল পেছনের বগল হতে ১.২৭ সে.মি. বেশি গভীর হবে।
সম্পূর্ণ ঝুলের সাথে নিচে হেমের জন্য ১.২৭ সে.মি.এবং সেলাইয়ের জন্য ১.২৭ সে.মি. যোগ দিতে হবে। এখন ক খ রেখাকে ক বিন্দু হতে ৪৫.৭২ সে.মি. নিচ পর্যন্ত বাড়িয়ে ক ট রেখা আঁকতে হবে। অতঃপর ঝ খ ট ঠ আয়তক্ষেত্র অংকন করতে হবে।
হাতার ড্রাফটিং- ক-ঘ = হাতার লম্বা- ৮.৮৯ সে.মি.+
মুড়ি- ২.৫৪ সে.মি.+ সেলাই ১.২৭ সে.মি. = ১২.৭ সে.মি.
ক-খ = হাতার চওড়া = বুকের ১/৪ = ১৩.৯৭ সে.মি.
খ-ঙ = বুকের ১/১২+১.২৭ সে.মি. = ৫.৮৪ সে.মি.
ঝ-ঘ = মুড়ি ২.৫৪ সে.মি.
ঝ-ঞ = কাফ ১/২ + ১.২৭ সে.মি. = ১১.৪৩ সে.মি.
ক-চ = ১.২৭ সে.মি.
ফতুয়ার হাতার ড্রাফটিং
এবার চ ও ও বিন্দু কোনাকোনিভাবে যোগ করতে হবে। এই রেখার মধ্যবিন্দু । ছ বিন্দুর ১.২৭ সে.মি.বাইরে একটি কিন্তু দিয়ে ও থেকে চ পর্যন্ত লেইস করতে হবে। হাতার সামনের অংশের লেইপ করার জন্য এবার স্থ ও ৬-এর মধ্যবিন্দু জ নিয়ে, জ এর ০.৬৩৫ সে.মি. ভেতরে একটি বিন্দু শনাক্ত করে গুচ এর সাথে চিত্রের মতো শেইপ করতে হবে।
কাজ - একটি ফয়ার সামনের অংশ, পেছনের অংশ ও হাতার ড্রাফটিং প্রস্তুত কর।
ফতুয়া প্রুস্তুত - ড্রাফটিং অনুসারে করা প্রস্তুত করতে হলে প্রথমে পরিকল্পনা অনুসারে কাপড়ের পরিমাণ নির্ধারণ করে, নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুযায়ী হেঁটে সেলাই করতে হবে। একটি ৩ বছরের শিশুর ফতুয়া তৈরির জন্য ১ গজ কাপড় এবং সেলাইয়ের জন্য সুভা, স্ক্রু, বোতাম, কাঁচি, সেলাই মেশিন ইত্যাদি হাতের কাছে রাখতে হবে ।
কাপড় ছাঁটা – কাপড়কে সঠিক পদ্ধতিতে ভাঁজ করে তার উপর ড্রাফটিংরের কাগজ রেখে পিন দিয়ে - আটকিয়ে নিতে হবে। এরপর নকশা অনুযায়ী কাপড় ছাঁটতে হবে। ইটিার পর পেছনের অংশ আলাদা করে, সামনের অংশের কালের শেইপ ও গলা হেঁটে গলার মধ্যবিন্দু থেকে ৭.৬২ সে.মি. নিচ পর্যন্ত হাটতে হবে।
পাশের কাপড়কে পুনরায় ভাঁজ করে হাতার ড্রাফটিং ফেলে একসাথে ইটিতে হবে। এবার হাতার ড্রাফটিংয়ের সামনের অংশের শেইপ করে, দুই হাতার সামনের অংশের কাপড় একসাথে করে, পুনরায় ড্রাফটিং ফেলে সামনের অংশের হাতার নেইপ ছাঁটতে হবে।
এবার টুকরা কাপড় দিয়ে গলার পাইপিং এবং বোতামের পট্টি তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিপরীত রঙের
কাপড়ও ব্যবহার করা যায়।
সেলাই - প্রথমে সামনের ও পেছনের অংশ একত্র করে দুই দিকের কাঁধের সেলাই করতে হবে। এরপর বোতামের জন্য পট্টির ব্যবস্থা করে গলার পাইপিং লাগাতে হবে। তারপর দুইপাশ সেলাই করে, ঝুল পরীক্ষা করে নিচের কাপড় ভাঁজ করে মুড়ে টাক সেলাই দিতে হবে।
হাতা দুটো আলাদাভাবে সেলাই করে বডির সাথে সংযোজন করতে হবে। এবার ফিটিং পরীক্ষা করে নিচে হেম সেলাই দিয়ে, বুকের সামনে লুপ ও বোতাম লাগাতে হবে। সবশেষে অতিরিক্ত সুতা কেটে, ইস্ত্রি করে ফড়ুয়া সেলাই শেষ
করতে হবে।
কাজ - ড্রাফটিং অনুসারে একটি ফতুল্লা তৈরি করা ।
আরও দেখুন...